নওয়াজকে চমকে দিলেন বিলাওয়াল
বিস্ময় সৃষ্টি করলেন বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। তিনি বৈঠক করতে লন্ডন গেলেন। তিন ঘণ্টা বৈঠক করলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের সঙ্গে। কিন্তু এত লম্বা সময়ে তাদের মধ্যে কি আলোচনা হলো!
এ নিয়ে কৌতুহল চারদিকে। আগেই নওয়াজ শরীফকে তার সহযোগীরা জানিয়েছিলেন সিনেট, পাঞ্জাবের গভর্নর এবং প্রেসিডেন্সির পদ নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছেন বিলাওয়াল।
কিন্তু তিন ঘণ্টার বৈঠক শেষে পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজের (পিএমএলএন) সূত্র দাবি করেছেন এসব বিষয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। পক্ষান্তরে সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন বিলাওয়াল। তিনি ওইসব বিষয় বৈঠকে উত্থাপন করেননি।
তিনি ভবিষ্যতে শক্তিশালী ও গতিশীল গণতন্ত্রের জন্য একসঙ্গে কাজ করার সম্ভাব্যতা ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ।
এতে বলা হয়, শুক্রবার লন্ডনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের সঙ্গে সাক্ষাত করেন বিলাওয়াল। তাদের মধ্যে দীর্ঘ তিন ঘণ্টা বৈঠক হয়। এই বৈঠককে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। প্রথম অংশে নওয়াজ শরীফ ও বিলাওয়ালের মধ্যে একান্তে বৈঠক হয়।
দ্বিতীয় অংশে উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা তাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন। এতে অংশ নেন দুই দলেরই সিনিয়র নেতারা। বিশ্বস্ত সূত্র বলেছেন, পিএমএলএনর সুপ্রিমো নওয়াজ শরীফের সামনে প্রেসিডেন্ট,গভর্নর এবং সিনেট চেয়ারম্যান নিয়োগ নিয়ে কোনো কথাই তুলে ধরেননি বিলাওয়াল।
তবে নওয়াজকে এসব বিষয়ে আগে থেকেই পরামর্শকরা জানিয়েছিলেন যে, বিলাওয়াল ওইসব পদের বিষয় উত্থাপন করতে পারেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। সবাইকে চমকে দিয়েছেন। বিলাওয়ারেল সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সূত্র জিও নিউজকে জানিয়েছেন গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা এবং পিএমএলএনের সুপ্রিমো নওয়াজ শরীফকে অভিনন্দন জানানোই ছিল বিলাওয়ালের লক্ষ্য।
বৈঠকে উপস্থিত উভয় পক্ষের সূত্রই বলেছেন, অতীতে যেসব ভুল হয়েছে তা ভুলে যেতে হবে বলে তারা একমত হয়েছেন। একপক্ষকে অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে রাজনীতি করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়। তবে গণতন্ত্রের স্বাথে১ একসঙ্গে কাজ করতে একমত হয়েছেন তারা। একমত হয়েছেন কোনো প্রতিষ্ঠানের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে। অবাধ মিডিয়া, মানবাধিকার এবং সর্বোপরি সংবিধানকে রক্ষার পক্ষে একমত হয়েছেন তারা। আরও জানানো হয়েছে, পাকিস্তান থেকে কোনো এজেন্ডা নিয়ে যাননি বিলাওয়াল।
অথবা বৃটেনে কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেননি। পক্ষান্তরে অতীতের রাজনীতিতে যেসব রাজনৈতিক দূরত্ব ছিল দুই দলের মধ্যে তাকে পাশে সরিয়ে রেখে দেশের বড় বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একমত হয়েছেন তারা। উল্লেখ্য, দুই দলের মধ্যে বিরোধপূর্ণ ইস্যুতে এবং পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে সরাসরি যোগাযোগে একমত হয়েছেন এই দুই নেতা।
মিটিংয়ের পরে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন এই দুই নেতা। এতে প্রকাশ্যে গণতন্ত্রের জন্য ভূমিকার জন্য নওয়াজকে ধন্যবাদ ও প্রশংসা জানান বিলাওয়াল। তাকে অভিনন্দন জানান। বলেন, তাদের যৌথ প্রচেষ্টার ফলে একটি অনিব১াচিত ও সিলেক্টেট ‘রাজ’কে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। ব্যালটের শক্তির কাছে পরাজিত হয়েছেন ইমরান খান। অন্যদিকে পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়ালকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নওয়াজ। অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ায় তার ভূমিকার জন্য এই ধন্যবাদ জানান তিনি।
সূত্রমতে, পাকিস্তানে ফেরার পরেই কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শপথ নেবেন বিলাওয়াল। এ প্রসঙ্গে নওয়াজ শরীফ বলেন, পিপিপির চেয়াম্যান একজন সক্ষম মানুষ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে তার দেশের সেবা করা উচিত। এর মধ্য দিয়ে তিনি দেশের সেবা করতে পারেন।