২৩ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ করায় টিআইবি’র প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ
কোভিড-১৯ টিকা দিতেই ২৩ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির খতিয়ান প্রকাশ করায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআইবি) প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
গত ১৩ই এপ্রিল এই তথ্য প্রকাশ করেছিল আওয়ামী সুশীলদের দ্বারা পরিচালিত ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ। সোমবার আওয়ামী স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাদের সুশীলদের দ্বারা প্রচারিত দুর্নীতির খতিয়ান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। টিআইবি’র গবেষণা রিপোর্টকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করেন জাহিদ মালেক। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য এটা করা হয়েছে।
টিকা কার্যক্রম ও টিকা ক্রয় বিষয়ে টিআইবির গবেষণা রিপোর্ট নিয়ে সোমবার (২৫শে এপ্রিল) সচিবালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ অভিযোগ করেন।
“করোনা ভাইরাস সংকট মোকাবিলায় সুশাসন: অন্তর্ভুক্তি ও স্বচ্ছতার চ্যালেঞ্জ” শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষ্যে গত ১৩ই এপ্রিল ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল টিআইবি। সেই সংবাদ সম্মেলনেই কোভিড-১৯ টিকা ক্রয় ও টিকা প্রদানে ২৩ হাজার কোটি টাকা অনিয়ম এবং ঘুষের খতিয়ান প্রকাশ করে টিআইবি।
প্রতিবেদন প্রকাশের পর সপ্তাহের বেশি চুপ ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। যদিও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের এই দুর্নীতির খবর প্রকাশ হওয়ায় বেশ চটেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
টিআইবি পরিচালনায় পেছনে অর্থের যোগানাদাতাদের সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যসচিব। গত ১৬ই এপ্রিল মুখ্যসচিব বলেছিলেন, “তাদেরকে (টিআইবি) সবচেয়ে বেশি অর্থায়ন করে অস্ট্রেলিয়ান খনন কোম্পানি বিএইচপি। পরিবেশ দূষণের দায়ে এই কোম্পানি বিভিন্ন দেশে কালো তালিকাভুক্ত”।
সোমবার (২৫এপ্রিল) স্বাস্থ্যমন্ত্রী বললেন, টিকা কেনার ক্ষেত্রে ৪০ হাজার কোটি খরচ হয়নি। ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আর যেসব টিকা ফ্রিতে পাওয়া গেছে তার মূল্য ধরা হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিকা কার্যক্রমে ৬৭ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ হাস্যকর। এই টাকা তো এখন ফকিরকে ভিক্ষা দিলেও নেয় না। ঘুষের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেন তিনি।
জাহিদ মালেক বলেন, কোভিড নিয়ন্ত্রণ ও টিকাদানে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। ১৩ কোটি প্রথম ডোজ, দ্বিতীয় ১১ কোটি ৬০ লাখ, ও বুস্টার এক কোটির বেশি ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। এতে দেশের ভাবমূর্তি বেড়েছে। কিন্তু সম্প্রতি টিআইবি একটি রিপোর্ট দিয়েছে। এই রিপোর্টের বেশকিছু তথ্য সঠিক নয়। তারা এমন কিছু তথ্য তুলে ধরেছে যাতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়।
তিনি বলেন, টিআইবি যে সার্ভে করেছে তাতে দেড় লাখ বুথের মধ্যে ১০৫টি বুথের তথ্য নিয়েছে। ১২ কোটির বেশি মানুষ টিকা দিলেও তারা সার্ভে করেছে মাত্র ১৮ শ’ জনের ওপর।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিআইবি করোনার দুই বছরের সার্ভে করেনি। তারা সার্ভে করেছে শেষ আট মাসের।
উৎসঃ আমার দেশ