আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের চিঠির জবাব দিতে পারেনি পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বেশ কিছু উন্নয়নসহযোগী আইন প্রণেতারা বাংলাদেশের কাছে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের হয়রানি ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য না পাওয়ায় যথাসময়ে চিঠির জবাব দেওয়া সম্ভব হয়নি।
‘তবে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের গ্রেফতার, মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয় নিরবচ্ছিন্নভাবে তদারকি করার জন্য পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর ফলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে।’
বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলোই লবিস্ট হিসেবে কাজ করে। কিন্তু দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে সেই দেশের আইন প্রণেতাদের সম্পর্কটা তেমন ঘনিষ্ঠ না হওয়ায় অর্থের বিনিময়ে নিয়োজিত লবিস্ট ফার্মগুলো বেশি প্রভাব বিস্তার করে না।
পক্ষান্তরে সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে জবাবদিহিতার প্রশ্ন রয়েছে বিধায় বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে বিদেশে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিদেশে অবস্থিত প্রবাসী বাঙালিদের কাজে লাগানোর পাশাপাশি লবিস্টদের বিষয়টিও সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে বলে তিনি কমিটিকে জানান।
কমিটির সদস্য ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বৈঠকে বলেন, আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলেও তারা এই হাতিয়ারটি ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের ওপর বিভিন্ন ধরনের চাপ সৃষ্টি করে তাদের স্বার্থ হাসিল করে থাকে। র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিকেও তিনি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আমেরিকার অহেতুক চাপ সৃষ্টি করা বলে মনে করেন। তাই সঠিক তথ্য সরবরাহপূর্বক কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পরামর্শ দেন।
বৈঠকে কমিটির সভাপতি কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয় ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস পূর্ব থেকে অবহিত না হওয়ার বিষয়টিকে বড় ব্যর্থতা বলে উল্লেখ করেন। একইসঙ্গে মালয়েশিয়া এবং লেবানন দূতাবাস সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করার অভিযোগ রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং সংসদ সদস্য মো. হাবিবে মিল্লাত অংশ নেন।