যুক্তরাষ্ট্রের হিউম্যান রাইটস রিপোর্ট নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড়

গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নই হবে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীর অগ্রাধিকার। এমনটাই জানিয়েছে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস। মানবজমিন।

স্টেট ডিপার্টমেন্টের ‘২০২১: কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাকটিস’ প্রকাশ উপলক্ষ্যে দূতাবাস বুধবার বার্তাটি প্রচার করে। বার্তাতে বলা হয়- যুক্তরাষ্ট্রের আইনে মানবাধিকার বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে মানবাধিকারকে রেখেছেন জানিয়ে ওই বার্তায় বলা হয়- যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি বিশ্বের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যেখানে মানবাধিকার সুরক্ষিত হয়, এর রক্ষকদের প্রশংসা করা হয় এবং যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তাদের জবাবদিহি করা হয়।

উল্লেখ্য, বুধবার বাংলাদেশ সময় মধ্যরাতে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের হিউম্যান রাইটস রিপোর্ট নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এতে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতির চিত্রই ফুটে উঠেছে। বাংলাদেশ বিষয়ক ৭৪ পৃষ্টার ওই রিপোর্ট নিয়ে সরকার এবং বিরোধী মহলে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া রিপোর্টে কিছু তথ্যে অসঙ্গতি এবং বিভ্রান্তির দাবি করেছেন। সরকারের তরফে রিপোর্টের অংশবিশেষ নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করা হলেও এখনো পুরো রিপোর্টটি প্রত্যাখ্যান করা হয়নি।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, এ নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে আলোচনা করে যেসব অঙ্গতি ধরা পড়বে (সরকারের দাবি মতে) তা তুলে ধরে সংশোধনী আনার চেষ্টা হবে।

দূতাবাসের বার্তায় ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে উদ্বৃত করে বলা হয় রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা বাড়াতে আমাদের অবশ্যই নিজেদের নিবেদিত করতে হবে, একসঙ্গে কাজের মাধ্যমে।

আমরা যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হব সে সম্পর্কে সততার সঙ্গে কথা বলতে হবে। মানবাধিকার পরিস্থিতির অগ্রগতি শুরু হয় তথ্য দিয়ে।’ দূতাবাসের বার্তায় জাতিসংঘের মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণার কথা উল্লেখ করে বলা হয়- মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা এবং তদপরবর্তী মানবাধিকার চুক্তিগুলোতে দেখানো পথ অনুসরণ করে, কান্ট্রি রিপোর্টগুলোতে (দেশভিত্তিক প্রতিবেদন) আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবাধিকার এবং শ্রম অধিকারের পরিপালন ও তাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতাকে তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্র।

দেশভিত্তিক প্রতিবেদনগুলো আইনি উপসংহার টানে না, দেশগুলোকে রেট করে না, বা তারা মান পূরণে ব্যর্থ হয়েছে কিনা তা-ও ঘোষণা করে না। বার্তায় বলা হয়- প্রেসিডেন্ট বাইডেন এমন একটি পররাষ্ট্রনীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যা আমাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে কূটনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে যুথবদ্ধ করে, যা গড়ে উঠেছে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সুরক্ষাকে কেন্দ্র করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *