উপায় খুঁজছে সরকার
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, দেশে মূল্যস্ফীতির হার সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে কী করা যায়, তা নিয়ে ভাবছে সরকার। অর্থনীতি এখন শক্তিশালী অবস্থানে আছে। তবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধটা এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
গতকাল অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আরেক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি আমরা পুরনো যেটা সেটাই রেখেছি। আমরা আগাম কিছু বলছি না। প্রজেকশন আপনারা যা দিচ্ছেন আমি সেটা অস্বীকার করবো না।
কারণ হলো এখনো আমরা শান্তির কোনো রাস্তা দেখছি না। যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ আজ পর্যন্ত আমাদের সামনে নেই। যুদ্ধ না থামা পর্যন্ত এর অন্য কোনো অ্যাডভাঞ্চ কোনো কিছু সৃষ্টি হয় এরকম অর্থনীতি এলাকায় আর কোনো সুযোগ নেই। এই মুহূর্তে যুদ্ধটাই হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
ভর্তুকি ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে আপনার কৌশল কী, ভর্তুকির ম্যানেজমেন্টে দাম বাড়ানোর বিষয়টি সরকার পেন্ডিং রাখছে এখন এটা পেন্ডিং রাখা হবে, না কি বাড়িয়ে সমন্বয় করা হবে- জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি, তবে সিদ্ধান্ত নেবো। আগে আমরা সাবসিডি ম্যানেজমেন্ট না মূল্যস্ফীতি ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভাবছি
মূল্যস্ফীতি ব্যবস্থাপনা কীভাবে করবো সেটা আপনারা সময়মতো জানতে পারবেন।
পণ্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে কোনো পদক্ষেপ নেবেন কিনা? মন্ত্রী বলেন, দাম কেন বাড়ছে- তার ব্যাখ্যা আমি আগে দিয়েছি। আমরা সারা বিশ্বের সঙ্গে একীভূত। অনেক দেশের সঙ্গে লেনদেন করতে হয়। কাজেই জিনিসপত্রের দাম একটু তো বাড়বেই। যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্ব এখন অস্থির। আশা করছি, যুদ্ধ থেমে যাবে, বিশ্ব স্থিতিশীল হবে এবং বাংলাদেশে জিনিসপত্রের দাম কমে আসবে।
দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি এখন ভালো অবস্থানে- এমন দাবি করে তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, যুদ্ধ থেমে যাবে এবং বিশ্ব স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। এতে দেশের অর্থনীতি আরও মজবুত হবে।
বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সর্বশেষ প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছরের জন্য বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধির পরিকল্পনায় কোনো কাটছাঁট হতে পারে কিনা- এমন প্রশ্নও ছিল অর্থমন্ত্রীর কাছে।
জবাবে তিনি বলেন, কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। চলতি অর্থবছরের জন্য জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৭.২ শতাংশ এবং আগামী অর্থবছরের জন্য ৭.৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি বহাল থাকবে এবং আমি মনে করি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী না হয় এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে তাহলে প্রাক্কলিত জিডিপি অর্জন সম্ভব হবে।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি ব্যবস্থাপনায় কোনো পরিবর্তন আনা হবে না বলেও জানান মন্ত্রী। বলেন, বাজেটে ভর্তুকির ওপর কোনো চাপ নেই। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি যা ধরা হয়েছে, আমি মনে করি সেটি সহনীয় অবস্থানে থাকবে। যুদ্ধ প্রলম্বিত না হলে বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে বলে আশা করছি।