১৯ বছর যাবত মুফতি শফিকুলকে খুঁজছিল পুলিশ

রমনা বটমূলের বোমা হামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুফতি শফিকুল ইসলামকে ভৈরব থেকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব সদস্যরা। বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে শহর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। ১৯ বছর যাবত তাকে খুঁজছিল ভৈরব থানার পুলিশ।

মুফতি শফিকুল রমনা বটমূলের বোমা হামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিই নয়; তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলারও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।

পুলিশ জানায়, তার বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় ৫টি ওয়ারেন্ট রয়েছে। ১৯ বছর যাবত তাকে ভৈরব থানা পুলিশ খুঁজছিল।

গ্রেফতারকৃত মুফতি শফিকুলের বাবার নাম মরহুম মৌলভি শিশু মিয়া। তার বাড়ি ভৈরব উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের বাঁশগাড়ী পশ্চিমপাড়া গ্রামে।

জানা গেছে, মুফতি শফিকুল ইসলাম রমনা বটমূলের মামলার মৃত্যুদণ্ড আসামি ছাড়াও সে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। গ্রেনেড হামলা মামলায় ১৯ জন আসামির মৃত্যুদণ্ড হয় এবং ১৯ জনের যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে। সে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ সংগঠনের আমির ছিল বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।

১৯৯২ সালে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ নামে একটি মৌলবাদী সংগঠনের সৃষ্টি হলে মুফতি শফিকুল ইসলাম দেশের আলোচনায় আসেন। শফিকুল ভৈরব এলাকায় প্রাইমারি পাশ করার পর স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় শিক্ষা নেন। এরপর চলে যান পাকিস্তান। সেখানে কিছুদিন লেখাপড়া করার পর আফগানিস্তান গিয়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশে এসে ১৯৯২ সালে হরকাতুল জিহাদ সংগঠন গড়ে তোলেন।

এক সময় শায়খ আবদুর রহমান ও মুফতি হান্নানের সঙ্গে জড়িত হয়ে দেশে জঙ্গিবাদ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন মুফতি শফিকুল ইসলাম। পরে ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার তদন্তের পর সে মামলার আসামি হন।

ভৈরবের বাঁশগাড়ী গ্রামের মৌলভি শিশু মিয়ার ৬ ছেলের মধ্য প্রথম ছেলে মুফতি শফিকুর রহমান। তারা ৪ বোন। তার ভাইদের মধ্য ৩ ভাই মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে এখন চাকরি করছেন। মুফতি শফিকুরের এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে ভৈরব এলাকায়।

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম মোস্তফা জানান, মুফতি শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় ৫টি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। তার মধ্য একটি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও একটি যাবজ্জীবন সাজার।

তিনি বলেন, আমি থানায় যোগদান করে জানতে পারি মুফতি শফিকুর ১৯ বছর যাবত পলাতক ছিল। তার বাড়িতে একাধিকবার পুলিশ অভিযান চালিয়েও তাকে পায়নি। আজ তাকে র‍্যাব গ্রেফতার করে বলে আমাকে অবহিত করেছে।

যুগান্তর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *