বৃটেনে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি, দিশেহারা নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ

বৃটেনে প্রতিদিন বাড়ছে দ্রব্যমূল্য। ফলে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা ও বিক্রেতা সকলেই। সবথেকে বেশী দাম বেড়েছে তেল, ডাল, চানা, মাংশ ও তরকারীর দাম। পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে।

যার ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ। দেশটিতে ব্রেক্সিটের পর দাম বাড়তে শুরু করে। এর পর কোভিডের থাবায় কারণে আর লাগাম টেনে ধরা যায়নি। এর মধ্যে মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।

গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশী দামে পণ্য কিনে খেতে হচ্ছে দেশটির জনগণকে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন কমিনিটির নিম্ন ও মধ্য আয়ের পরিবারগুলো বিপাকে পড়েছেন। বিশেষ করে রোজা থাকায় মুসলিমরা।

এমন অবস্থায় অর্থনৈতিকভাবে আটকে গেছে মানুষের জীবনযাত্রার মান। পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় বাসস্থান, বস্ত্রের মতো মৌলিক চাহিদা গুলোর ব্যায় কমিয়ে ফেলেছেন নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ। তার পরও আয়-ব্যয় মিলাতে পারছেন না তারা।

আগে ব্রেক্সিটের কারণে বিভিন্ন দেশ থেকে অবাধে পণ্য আসা বন্ধ থাকায় দাম বৃদ্ধির কথা জানালেও এখন রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধের ফলে দাম বেড়েছে বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

আইএফএস এর তথ্যমতে বৃটেনে ৫.৫ শতাংশ লিভিং কস্ট বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই বৃদ্ধি ৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এতে সাধারণ পরিবারগুলো পড়েছে মহা সমস্যায়। রেজোলিউশন ফাউন্ডেশন পূর্বাভাস দিয়েছে ‘মূল্যস্ফীতির প্রভাব বিবেচনা করা হলে একটি সাধারণ পরিবারের আয় এই বছর প্রায় ১০০০ পাউন্ড কমে যাবে।’

লন্ডন শহরের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, বেশ কিছু পণ্যের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। ক্রেতারা দাম শুনে ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে এক কেজির জায়গায় বাজার কমিয়ে আধা কেজি নিয়ে যাচ্ছেন।

তবে বেশীর ভাগ দাম বেড়েছে এশিয়ান ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য আগে ব্রেক্সিট এর দোহাই দিলেও এখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।

তবে এটা মানতে নারাজ অনেক ক্রেতা। তাদের বক্তব্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কিছু পণ্যের দাম বাড়তে পারে এটা সত্য, কিন্ত এই সুযোগে এশিয়ার দেশ থেকে আসা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

ব্যবসায়ী মুসলেহ উদ্দীন এ প্রতিবেদকে বলেন, শুধু দ্রব্যমূল্য নয়, সব ধরণের (বিদ্যুৎ-গ্যাস) বিল ও জ্বালানী তেলের দাম বেড়েছে। জানিনা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।

এ বিষয়ে দেশটির আইনজীবি ও বর্তমান ক্ষমতাশীন দলের রাজনীতিবিদ দেওয়ান মাহদি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের অপ্রয়োজনীয় আইটেমগুলো কিছু দিনের জন্য বাদ দিতে হবে।

লন্ডনের সু-পরিচিত পাইকারী ব্যবসায়ী দিনেশ মদি বলেন, ব্যবসার প্রথম চন্দ্রপতন ঘটে কোভিড-১৯ এর সময়। সে সময় দাম বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে দাম বৃদ্ধি ছাড়াও বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় দাম আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *