সরকারকে বিদায় নিতেই হবে
দুর্নীতিবাজ প্রশাসনের ওপর ভর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না, সরকারকে বিদায় নিতেই হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
তিনি বলেন, ধাপে ধাপে আন্দোলন হবে। সরকার পতন কীভাবে করতে হয়, সেই অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। এরপর বাংলাদেশে কোন সরকার আসবে তা জনগণ ঠিক করবে।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জে যুবদল নেতা শাওন হত্যার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবদল এ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ শেষে এক শোকর্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র্যালিটি নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে পল্টন, ফকিরাপুল হয়ে আবার নয়াপল্টন কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে গেছেন। হয়তো কিছু দিতে গেছে, বিনিময়ে কিছু দিন থাকি (ক্ষমতায়), বাংলাদেশের মানুষের ধারণা কিন্তু এ রকম।
তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশসহ গণতান্ত্রিক বিশ্বের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আজীবন। কিন্তু গোলামি না। বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নেই। আমরা বন্ধুত্ব চাই, কর্তৃত্ব চাই না।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যাবে নিশ্চিত থাকেন। যতই টালবাহানা করুক, অতীতে টালবাহানা করে পার পেয়েছে, এবার পার পাবে না। ভারত সুজাতা সিংয়ের মতো আরেকজনকে পাঠিয়ে বাংলাদেশে নির্বাচন করবে, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখবে- সেই ভারতেরও কতটুকু শক্তি আছে, সেটাও সন্দেহ রয়েছে। কারণ, বিশ্বায়নের এই যুগে ভারত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। দৃশ্যমান ফ্যাসিবাদের পক্ষে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়ালে গণতান্ত্রিক বিশ্বের সবার বিবেক নড়ে উঠবে।
তিনি বলেন, ভারতকেও সাবধান হওয়ার ব্যাপার আছে, অতীতের নীতি পরিবর্তন ও সংশোধন করার ব্যাপার আছে। বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে কে সরকারে আসবে, কে আসবে না।
এ সময় ভারত সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশটির সরকারের একজন প্রতিমন্ত্রীর অভ্যর্থনা জানানোর সমালোচনা করেন গয়েশ্বর।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় থাকার যে চেষ্টা করছে, সেটা পারবে না। এই সরকারের বিরুদ্ধে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে-কেউ প্রকাশ্যে, কেউ অপ্রকাশ্যে। কেউ সরবে, কেউ নীরবে।
নারায়ণগঞ্জে শাওন ও ভোলায় নুরে আলম ও আবদুর রহিম নিহতের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির এ নেতা বলেন, এই পুলিশের মধ্যে ভালো লোকও আছে। আমার ধারণা ছিল, যে পুলিশ শাওনকে গুলি করে হত্যা করলো, তাকে ক্লোজড করে তার বিরুদ্ধে ডিপার্টমেন্টাল ব্যবস্থা নেবে। ভোলায় নুরে আলম ও আবদুর রহিমকে হত্যা করলো, কোনো ব্যবস্থা নিলো না। এর কারণ হলো এই সরকার নির্ভর করে পুলিশের ওপর। পুলিশ দিয়ে রাতে ভোটবাক্স ভরেছে। সে কারণে সরকার পুলিশের কনস্টেবলকেও ধমক দেওয়ার ক্ষমতা রাখে না।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, একটা জেলায় আমাদের এক লাখ কর্মী, সেখানে পুলিশ পাঁচশ। আমরা যদি পোশাক না চিনি অবস্থাটা কী হবে?
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুবদলের ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম মিল্টন। মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব গোলাম মাওলা শাহীনের পরিচালনায় এসময় আরও বক্তব্য দেন- যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, বিএনপির সহ যুব বিষয়ক সম্পাদক নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহানগরের নেতা খন্দকার এনামুল হক এনাম প্রমুখ।