শেষ বিবৃতিতে যে আহ্বান রেখে গেছেন আকবর আলি খান
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান জাতির কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন বহু কারণে। এর একটি বড় কারণ হচ্ছে, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দেশের রাজনীতি ও শাসন ব্যবস্থার সংস্কারে তার সক্রিয় ভূমিকা।
সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার, আনুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন, রেফারেন্ডাম, স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ ও জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহিতার বিষয়ে তিনি সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। দেশের সংকটময় মুহূর্তে নাগরিক সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং সে সংকট উত্তরণে করণীয় সম্পর্কে সরকার ও জনগণকে পরামর্শ প্রদানে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।
মৃত্যুর দুইদিন আগেও ড. আকবর আলি খান সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়ে দেশের বিশিষ্ট ৩৮ নাগরিকের সঙ্গে যৌথভাবে বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে সর্বোচ্চ দেড়শ’ আসনে ইভিএম ব্যবহারে ইসির নেওয়া সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক হিসেবে আখ্যা দিয়ে এসব যন্ত্র কিনতে বিপুল ব্যয় কতটুকু যৌক্তিক, তা ভেবে দেখারও অনুরোধ জানান তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়াই নির্বাচন কমিশন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ভোট গ্রহণে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা মনে করি যে কমিশনের এ সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক।
এটি রাজনৈতিক বিতর্ককে আরও উসকে দেবে এবং কমিশনের বর্তমান আস্থার সংকটকে আরও প্রকট করে তুলবে। আমরা আবারো একটি ব্যর্থ নির্বাচনের কবলে পড়ব, যা জাতি হিসেবে আমাদের চরম সংকটের দিকে ধাবিত করবে। কমিশনের সিদ্ধান্তের অযৌক্তিকতার কয়েকটি কারণও বিবৃতিতে তুলে ধরা হয়।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, ইভিএম ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের যে আস্থাহীনতা, তা দূর না করেই ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত আগামী নির্বাচন নিয়ে জনমনে সন্দেহ তৈরি হবে ও আরেকটি অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্কের ক্ষেত্র তৈরি করবে।
ড. আকবর আলি খান ছাড়াও বিবৃতিতে সই করেছেন ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান ও আকবর আলি খান, বিচারপতি মো. আবদুল মতিন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার প্রমুখ।