কক্সবাজারে মাটি ফুঁড়ে বের হচ্ছে আগ্নেয়গিরির লাভার মতো আগুন, আতঙ্কে এলাকাবাসী

কক্সবাজার সরকারি কলেজের সামনে চলমান উন্নয়নকাজের পাশের স্থানে ফেটে খণ্ডিত হওয়া মাটির ভেতর হঠাৎ আগ্নেয়গিরির আগুনের লাভার মতো উদগীরণ বেরিয়েছে।

রোববার ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে পথচারীরা অকস্মাৎ এ উদগীরণ দেখতে পেলে খবরটি দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

এতে ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার ভীড় লেগে যায়। উপস্থিত লোকজন স্থির চিত্র ও ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এ আগুনের উৎস নিয়ে শুরু হয় কৌতুহল। সঙ্গে ভর করে আতঙ্কও। মাগরিবের নামাজের আগে এটি আল্লাহতালার কি নিদর্শন হতে পারে তা নিয়ে চলে ধর্মীয় নানা আলোচনাও।

প্রায় ঘন্টা দেড়েক আগুন উদগীরণের পর ফায়ার সার্ভিস দল এসে আগুন নিভিয়ে দয়েছে। আগুন নিভালেও ধোঁয়া বের হচ্ছিল গভীর রাত অবধি।

স্থানীয়রা জানান, বিকেলে একটি গর্ত থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে পথচারীরা। ধীরে ধীরে স্থানটি ফাটল আকারে বড় হতে থাকে। ফাটলের ভেতর তরতাজা আগুনের কয়লার মতো লাভা দৃশ্যমান হয়। যা উপস্থিত মানুষকে ভাবনায় ফেলে দেয়। খবরটি দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার পর লোকজন জড়ো হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস এসে অনেকক্ষণ চেষ্টার পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

কক্সবাজার ফায়ার স্টেশনের সহকারি পরিচালক শাহাদাত হোসেন জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের টিম প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে পানি ছিটিয়ে আগুন নিভিয়ে দেয়। যেখানে আগুনের লাভা দেখা গেছে জায়গাটি ভরাট এলাকা। মাটির নিচে কোনো গাছ বা অন্যকোনো আগুন ধারক দ্রব্য থাকতে পারে। ভরাট মাটি ফেটে সেই দ্রব্যে কোনো না কোনো ভাবে আগুন লাগে। মাটির ভেতর যেহেতু সেই দ্রব্যে লাগা আগুন দীর্ঘক্ষণ তরতাজা রয়েছে বলে মনে করেন ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।

তবে এলাকাবাসীদের মতে, একদিকে রেল স্টেশন, মূল সড়কে উঠার রাস্তা, অপর দিকে প্রধান সড়ক প্রসস্থকরণ ও ড্রেনেজ প্রকল্প সবগুলো একসঙ্গে চলছে। কাথাও থেকে মাটি তোলা হচ্ছে আবার কোথাও ভরাট হচ্ছে মাটি। আবার সেই সবস্থানে ফেলা হচ্ছে বিভিন্ন প্লাষ্টিক বর্জ্য ও ময়লা। যে স্থানে আগুন দেখা মিলেছে সে স্থানটি স্থানীয় ও ব্যবসায়ীরা অনেকটা ডাস্টবিনের মত ব্যবহার করতো। সম্প্রতি রাস্তা সংস্কারের কাজ করার সময় ময়লার উপর মাটি চাপা পড়ে।

এ ছাড়াও ওই স্থান দিয়ে বিটিসিএল এর কানেকশন ক্যাবল টানা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে বর্জ্য ও প্রাষ্টিক বর্জ্য হতে কিংবা সিগারেটের আগুন হতে বৈর্জে আগুন লেগে তা ধীরে ফাটলে ঢুকে গেছে। এবং এখান হতে ওখানে লেগে আগুনের কয়লার সারি বড় হয়ে লাভার মতো হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান সিকদার বলেন, এলাকার বয়োবৃদ্ধ অনেক মুরব্বিদের দাবি অতীত সময়ে এমন দৃশ্য তারা কখনো দেখেননি। স্যাটেলাইট জীবন সম্পর্কে জানা ব্যক্তিরা পৃথিবীর নানা প্রান্তে পাহাড়ে, মাঠে মাটি ভেদ করে আগ্নেয়গিরির লাভা দেখলেও দেশের মাটিতে এমন দৃশ্য কল্পনাও করেনি। স্থানীয় আলেম সমাজ, বয়োবৃদ্ধরা একে আল্লাহর অলৌকিক নিদর্শন বলে আখ্যায়িত করেছেন। এর মাধ্যমে হয়তো কেয়ামতের নমুনা বা কোন ম্যাসেজ আল্লাহপাক তার বান্দাদের জন্য উপস্থাপন করে থাকতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *