অতীত মনে করিয়ে দিলেন শেখ হাসিনা: কি করবে জাপা?

গতকাল ২০ তম জাতীয় সংসদ অধিবেশনে অতীতের বেশ কিছু চরম সত্য কথা তুলে ধরেছেন সংসদের নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী এবং বিরোধী দলের নেতাদের অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। তিনি বলেন, শুধু আওয়ামী লীগ কেন, বিরোধী দলের যারা আছেন; বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ, জেনারেল এরশাদ, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু থেকে যারাই আছেন, তারাও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

জাতীয় পার্টি বোধ হয় এখন সেই নির্যাতনের কথা ভুলেই গেছে। রওশন এরশাদের প্রসঙ্গ টেনে প্রদানমন্ত্রী বলেন, রওশন এরশাদ মাস্টার্স ডিগ্রি পাস। প্যানেল কোড অনুযায়ী মাস্টার ডিগ্রি পাস হলে ডিভিশন দিতে হয়। কিন্তু তাকে সাধারণ কয়েদিদের সঙ্গে ফেলে রাখা হয়েছিলো। কিন্তু খালেদা জিয়ার ব্যাপারে আমরা সরকারের নির্বাহী ক্ষমতায় মানবিকতা দেখিয়েছি। খালেদা জিয়াকে অসুস্থ বলে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাকে বাসায় থাকার সুযোগ করে দিয়েছি।

সংসদে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক মহলের সবার চোখ এখন জাতীয় পার্টির দিকে। রাজনৈতিক সচেতন মহলের কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় পার্টি এখন কি করবে? উল্লেখ্য যে, জাতীয় পার্টি এখন সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সংসদের বাইরে রাজনীতির মাঠে সরকারের নীতির কঠোর সমালোচনা করছে। জাতীয় পার্টি আর আওয়ামী লীগের ত্রীতদাস হয়ে থাকবে না বলে জানিয়েছে দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

জাতীয় পার্টির এমন অবস্থানের কারণে দলটি শেষ পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে জোট করবে বলেও কোনো কোনো মহল মনে করছে। অথচ প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া তথ্যমতে, দলটির প্রধান পৃষ্টপোষক বেগম রওশন এরশাদ বিএনপির শাসনামলে অমানষিক নির্যাতন ভোগ করেছে। কারাগারে প্রাপ্ত সুবিধাটুকু তাকে দেওয়া হয়নি। তাহলে এখন সেই দলের সঙ্গে কিভাবে আন্দোলন করবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি নিয়ে আগাম কোনো অনুমান করা বেশ কষ্টসাধ্য। কারণ রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি একটি নাটকীয় চরিত্র। দলটি বিএনপির সঙ্গে জোটে যোগ দেবে এ ধরনের কোনো আভাস এখন পর্যন্ত দলের পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি। যদিও তারা বিএনপির মতো করেই সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তবে জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে একক ভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যদিও দলটির এই ধরনের উচ্চাভিলাষ অনাকাঙ্খিত। কারণ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের অবস্থানই নড়বড়ে। তবে শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি কি সিদ্ধান্ত নেয় সেটিই এখন দেখার বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *